- Get link
- X
- Other Apps
মেহেদি পাতার রস খেলে কি হয়?
মেহেদি পাতার রস খাওয়া সাধারণত অনিরাপদ বলে মনে করা হয় এবং এর ফলে গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। মেহেদি পাতা ত্বকে ব্যবহার করার জন্য নিরাপদ হলেও, এটি খাওয়ার জন্য তৈরি হয়নি।
মেহেদি পাতার রস খেলে যেসব সমস্যা হতে পারে:
পেট খারাপ: মেহেদি পাতার রসে থাকা কিছু উপাদান হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে, যার ফলে পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া বা বমি হতে পারে।
রক্তের সমস্যা: কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, মেহেদি পাতা খেলে তা লাল রক্ত কণিকা (red blood cells) ভেঙে দিতে পারে। বিশেষ করে, যাদের G6PD (Glucose-6-Phosphate Dehydrogenase) নামক এনজাইমের অভাব আছে, তাদের ক্ষেত্রে এটি আরও বিপজ্জনক হতে পারে। এই সমস্যাটি প্রাণঘাতীও হতে পারে।
লিভার এবং কিডনির ক্ষতি: অতিরিক্ত পরিমাণে মেহেদি পাতার রস খেলে তা লিভার এবং কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং এই অঙ্গগুলোর ক্ষতি হতে পারে।
অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া: কিছু মানুষের মেহেদি পাতার প্রতি অ্যালার্জি থাকতে পারে। এর রস খেলে শরীরে ফুসকুড়ি, চুলকানি, শ্বাসকষ্ট বা আরও গুরুতর অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
তাই, মেহেদি পাতার রস না খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। যদি কেউ ভুল করে এটি খেয়ে ফেলেন এবং কোনো ধরনের অসুস্থতা অনুভব করেন, তাহলে দেরি না করে অবিলম্বে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
মেহেদি পাতার অপকারিতা
মেহেদি পাতার কিছু উপকারী দিক থাকলেও এর কিছু অপকারিতাও রয়েছে, বিশেষ করে যখন এটি ভুলভাবে ব্যবহার করা হয় অথবা নকল ও রাসায়নিক মিশ্রিত মেহেদি ব্যবহার করা হয়। মেহেদি পাতার প্রধান অপকারিতাগুলো হলো:
১. অ্যালার্জি বা ত্বকের সংবেদনশীলতা:
প্রাকৃতিক মেহেদি পাতাও কিছু মানুষের ত্বকে অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এর কারণ হলো এতে থাকা 'লসন' নামক এক প্রকার রঞ্জক পদার্থ।
অ্যালার্জির লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে চুলকানি, লালচে ভাব, ফুসকুড়ি, ত্বক ফুলে যাওয়া বা ফোসকা পড়া।
বিশেষ করে 'ব্ল্যাক হেনা' (Black Henna) নামক মেহেদিতে প্রায়ই PPD (প্যারা-ফেনিলিনডাইঅ্যামিন) নামে একটি ক্ষতিকর রাসায়নিক মেশানো হয়, যা ত্বকে মারাত্মক অ্যালার্জি এবং স্থায়ী দাগ তৈরি করতে পারে। অনেক সময় ত্বক পুড়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে।
২. চুলের শুষ্কতা এবং ক্ষতি:
চুলে যদি অতিরিক্ত মেহেদি ব্যবহার করা হয়, তবে তা চুলকে রুক্ষ ও শুষ্ক করে তুলতে পারে।
মেহেদির রঞ্জক অণুগুলো চুলের প্রাকৃতিক তেল এবং আর্দ্রতা শোষণ করে নেয়, যার ফলে চুল ভঙ্গুর হয়ে যায় এবং আগা ফাটার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৩. লিভার এবং কিডনির ক্ষতি (খাওয়ার ক্ষেত্রে):
মেহেদি পাতা খাওয়ার জন্য তৈরি নয়। যদিও কিছু লোক ঐতিহ্যগতভাবে এর রস পান করার দাবি করে, এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে।
মেহেদি পাতার রস খেলে তা লিভার এবং কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং এই অঙ্গগুলোর গুরুতর ক্ষতি হতে পারে।
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, এটি লাল রক্ত কণিকা ভেঙে দিতে পারে, যা বিশেষ করে G6PD এনজাইমের অভাবযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে।
৪. ক্ষতিকর রাসায়নিকের ব্যবহার:
বাজারে পাওয়া টিউব মেহেদিগুলোতে প্রায়ই রাসায়নিক রং যেমন প্যারাফিনাইলানিডিয়ামিন, প্যারাফিনাইলমার্কারিক নাইট্রেট, এবং পটাসিয়াম ডাইক্রোমেট ব্যবহার করা হয়।
এই রাসায়নিকগুলো ত্বকের জন্য খুবই ক্ষতিকর এবং মারাত্মক চর্মরোগের কারণ হতে পারে।
৫. অন্যান্য সমস্যা:
কিছু বিরল ক্ষেত্রে, মেহেদির তীব্র গন্ধ বা এর সরাসরি সংস্পর্শ স্নায়ুতন্ত্রে প্রভাব ফেলতে পারে, যার ফলে খিঁচুনির মতো লক্ষণও দেখা যেতে পারে।
মেহেদি প্রয়োগের জন্য অপরিচ্ছন্ন সরঞ্জাম ব্যবহার করলে ত্বকে সংক্রমণ হতে পারে।
এই সমস্যাগুলো এড়াতে, শুধুমাত্র প্রাকৃতিক এবং বিশুদ্ধ মেহেদি পাতা ব্যবহার করা উচিত। বাজারে কেনা টিউব মেহেদি ব্যবহারের আগে, হাতের অল্প একটু অংশে লাগিয়ে পরীক্ষা করে নেওয়া ভালো। যদি কোনো ধরনের অস্বস্তি বা অ্যালার্জি দেখা যায়, তবে সেই মেহেদি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
.png)
Comments
Post a Comment